খেলাপি ঋণ ৯৪ হাজার কোটি টাকা

3
Spread the love

ঢাকা অফিস

খেলাপি হবার ভয়ে ঋণ বিতরণ কমিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এমন অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বুধবার ( ৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম ও সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। ভয় দূর করে ঋণ অনুমোদনের পরামর্শ দিয়ে ফজলে কবির বলেন, আপনারা (কর্মকর্তারা) যদি সব ধরনের নিয়ম মেনে ঋণ দেন, তাহলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ঋণ দিতে নিয়ম মেনে ঋণ দিলে আপনারা যেন কোনও সমস্যায় না পড়েন সে বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।

খেলাপি হলে শুরুতেই মামলায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ফজলে কবির আরও বলেন, প্রতিষ্ঠান কোনও সমস্যায় পড়লে তাকে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করে কর্মযজ্ঞে ফিরে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করতে হবে। কারণ মামলা করলে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কর্মসংস্থানে বাধা তৈরি হয়। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তাদের এ ধরনের মনোভাব বদলে যাচাই-বাচাই করে ঋণ বিতরণের পরামর্শ দেন তিনি। কোন একক খাতে যেন ঋণ চলে না যায় সে বিষয়েও সর্তক করেন তিনি।

সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, বর্তমানে দেশের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৪ হাজার কোটি টাকা যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। একটি দেশের অর্থনীতির জন্য এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে গত সেপ্টেম্বর শেষে এটা অনেক বেশি ছিল। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ১০ বছর মেয়াদি রিশিডিউল পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির কথা চিন্তা করে সচেতনভাবে ঋণ বিতরণ ও খেলাপি ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া জোরদারের তাগিদ দেন তিনি।

ফজলে কবির বলেন, হলমার্কের ঘটনার পর সোনালী ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সংকোচ ও ভীতি তৈরি হয়েছে। এটি থাকা একেবারেই উচিত নয়। সম্মেলনে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, দেড় কোটির বেশি গ্রাহক সংখ্যার এই ব্যাংকটির চার ভাগের এক ভাগ শাখাই লোকসানে রয়েছে। এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। আগামী এপ্রিল থেকে সব ব্যাংক ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করবে। এখন আমরা যদি অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে বেশি সেবা দিতে না পারি তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়ব।

চেয়ারম্যান আরও জানান, ১৭ মার্চ (মঙ্গলবার) প্রথম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে মোবাইল অ্যাপ চালু করবে। এ বছরের মধ্যেই মোবাইল এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও রেমিট্যান্স আনার বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে সোনালী ব্যাংক।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যাংকগুলোকে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার তাগিদ দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে আর্থিকভাবে যেন আমরা পিছিয়ে না যাই সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এখন বিশ্বব্যাপী একটি ভিন্ন রূপে দেখা যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশের কাতারে যেতে চাই। তাই সচেতনতার সঙ্গে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।