বাগেরহাট প্রতিনিধি :
গ্রাহকদের এক কোটি এক লাখ টাকা আতœসাতের অভিযোগের দুদকের করা মামলায় বাগেরহাট সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমানকে (৫৮) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গাজী রহমানের আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন। ব্যাংক কর্মকর্তা শেখ মুজিবর রহমান জেলার রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের চাকশ্রী গ্রামের প্রয়াত শেখ হাসান আলীর ছেলে।
দূর্নীতি দমন কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের (বাগেরহাট-খুলনা-সাতক্ষীরা) নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জী এই প্রতিবেদককে বলেন, ২০১২ সাল থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত বাগেরহাট সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখার ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় শেখ মুজিবর রহমান ও জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবু পরষ্পর যোগসাজসে ওই ব্যাংকের সাধারণ গ্রাহকদের রাখা এক কোটি এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৭৯ টাকা আতœসাত করেন। দূর্নীতি দমন কমিশন তদন্তে নেমে প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আতœসাতের সত্যতা পায়। এই ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুল হাসান বাদী হয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমান ও জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের ২ নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা করেন। এই মামলার প্রধান আসামী সাবেক ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অপর আসামী শেখ মাহফিজুর রহমান বাবু (৩৭) বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত: এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরআগে ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাগেরহাট সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখার অভ্যন্তরীণ অডিট নিরিক্ষাকালে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা অর্থ আতœসাতের তথ্য ফাঁস হয়। এরপর ঘটনা তদন্তে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি কমিটি গঠন করে। অভ্যন্তরীণ অডিটে অর্থ আতœসাতের সত্যতা মেলায় তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমান ও জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবুকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে। এরমধ্যে ব্যাংকের জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবু আতœসাত করা ৩৫ লাখ টাকা ফেরতও দিয়েছেন। ব্যাংকের ওই চার কোটি ৪৯ লাখ টাকা আতœসাতের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর সোনালী ব্যাঙ্কে নতুন যোগদান করা ব্যবস্থাপক খান বাবলুর রহমান বাদী হয়ে ব্যাঙ্কের জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমানের নাম উল্লেখ করে বাগেরহাট মডেল থানায় অর্থ আতœসাত ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করেন। ওই মামলাটিও বর্তমানে দুদক তদন্ত করছে।