খুলনা অঞ্চলে কৃষি ব্যাংকের ৫৯৪ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ: সুবিধাভোগী ২ লক্ষাধিক কৃষক

3
Spread the love

রশীদ হারুন

কৃষি ঋণের আওতা বৃদ্ধি, আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণ, পল্লী এলাকায় ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্প্রসারণে প্রযুক্তিসহ পল্লী এলাকায় অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গ্রামীন দারিদ্র বিমোচন লক্ষ্যে পল্লী ঋণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। দারিদ্র বিমোচন খাতে কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৩৫৪ জন কৃষকের মাঝে ৫৯৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ৭ মাসে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক খুলনা বিভাগের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭৮১ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

সূত্র জানান, খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর ও নড়াইল জেলায় এ ঋণ বিতরণ করা হয়। শস্য, মৎস্য চাষ, প্রাণি সম্পদ, সেচ যন্ত্রপাতি ক্রয়, শস্য গুদামজাত ও বাজারজাতকরণ, দারিদ্র বিমোচন, কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য খাত , এস এম ই, কৃষি ভিত্তিক শিল্প বা প্রকল্প এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কিত ঋণ এই  ১০ খাতে ঋণ বিতরণ করা হয়ে থাকে। ব্যাংকের শ্রেণি কৃত ঋনের পরিমান রয়েছে ১৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এই ৭ মাসে আদায় হয়েছে ৫৮৯ কোটি ৩ লাখ টাকা। ঋণ আদায় সন্তোষজনক। বিনিয়োগ করা হয়েছে ১৮০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।

সূত্র জানিয়েছেন, খাত ভিত্তিক ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৬৯ হাজার ৯১৭ জনকে। বিতণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭৮১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে কৃষি ঋণ বিতণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২৩৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ৪১ হাজার ৪১৬ জন কৃষকের মধ্যে ৫০১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ কোটি ৬ লাখ টাকা। ১০ জনের মধ্যে ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা কিতরণ করা হয়েছে। এসএমই’র ঋণ বিতণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ১ হাজার ২১৮ জনের মধ্যে ৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে এবং বৈদেশিক বাণিজ্য খাতে ১৭ জনের মধ্যে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বিনিয়োগকৃত টাকার মধ্যে খুলনা জেলায় ৬০৩ কোটি ৯৫ লাখ। শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমান ১২৭ কোটি ২ লাখ টাকা। ঋণের হার ২১ ভাগ। বাগেরহাট জেলায় ৩৩৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমান ৬ কোটি ১২ লাখ টাকা।  ঋণের হার ২ভাগ। সাতক্ষীরা জেলায় ৩৩৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ঋণের পরিমান ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ঋণের হার ৮ভাগ। যশোর জেলায় ৩৬৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ঋণের পরিমান ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা নড়াইল জেলায় ১৬০ কোটি ৮৩লাখ টাকা। ঋণের পরিমান  ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং ঋণের হার ৪ ভাগ। 

সহজ শর্তে কৃষকদের  ঋণ দেয়া হয়ে থাকে। সরকার ঘোষিত কৃষকের কাছ থেকে শতকরা ৯ ভাগ সুদ ধার্য করা হয়েছে। যা অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় কম। কৃষকের চাহিদার ওপর নির্ভর করে ঋণ বিতরণ করা হয়।

খুলনা বিভাগের  ৫ জেলায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক’র ৮৮টি শাখা এই ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খুলনা ও বাগেরহাট ২১টি করে , সাতক্ষীরায় ১৭ যশোর ২২টি ও নড়াইল জেলায় ৭টি শাখা রয়েছে।

সূত্র জানান, ঋণ নিয়ে কৃষকরা তাদের চাহিদা পূরণ করেছে। ফলে কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। কৃষকই দেশ খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ ও স্বনির্ভর করে তুলছেন। সরকারের আন্তরিকায় দেশে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে।

খুলনা বিভাগের ৫ জেলায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ৮৮টি শাখার মাধ্যমে প্রবাসীরা রেমিটেন্স প্রেরণ করেছেন। ব্যাংক থেকে ৭৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা রেমিট্যান্স গ্রাহকের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায়  ৮ কোটি ৫১ লাখ , বাগেরহাটে ৯ কোটি ৫৬ লাখ , সাতক্ষীরায় ২৩ কোটি ২৪ লাখ ,যশোরে ২৭ কোটি ৭ লাখ ও নড়াইল ১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক এস এম এ কাইয়ুম জানান, কৃষকদের প্রয়োজনে ঋণ দেয়া হয়েছে। আমরা সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছি। দেশ উন্নয়নে কৃষকদের বড় একটা ভূমিকা রয়েছে। কৃষকরা তাদের শ্রম দিয়ে ফসল ফলান। তারাই কৃষিতে বিপ্লব এনেছেন। কোন রকম হয়রানি ছাড়াই কৃষকরা ঋণ নিচ্ছেন। কৃষক এই ঋণ নিয়ে উপকৃত হচ্ছেন।