গত বছর রাজধানীসহ সারাদেশে ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আগে থেকেই মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি জানান: মশার উপদ্রব যাতে সহ্য করতে না হয়, সেজন্য আগে থেকেই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মশা মারার ওষুধও মজুদ আছে যথেষ্ট পরিমাণ। স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনও নিজেদের মতো করে মশার বিরুদ্ধে আগেভাগে প্রস্তুতি ও কার্যক্রম শুরুর কথা জানিয়েছে। নগরবাসীকে তারা আশ্বস্ত করে বলছে, এরই মধ্যে পুরো বছর ধরে মশক নিধনের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। তাই এবার ডেঙ্গুর প্রাক-মৌসুম, মূল মৌসুম আর মৌসুম-পরবর্তী সময়ে কাজ করতে সহজ হবে।
মশার বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং দেশের সবচেয়ে বড় দুই সিটি করপোরেশনের এমন সাজ সাজ রবের মধ্যেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে মশার উপদ্রবের খবর উঠে আসছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় ফেব্রুয়ারির শুরুতে শীত কমার পর একটু একটু গরমের শুরুতে মশার দল তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর দরজা-জানালা খোলা রাখাই দায় হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশক নিধনে কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। গতবছরের মতো নানা প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই।
তাই নগরবাসীর শঙ্কা এখনই মশার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে গতবছরের পরিস্তিতি ফিরে আসতে পারে। তাদের এই শঙ্কা মিথ্যাও নয়, কেননা আগের বছরে আমরা দেখেছি, পর্যাপ্ত ওষুধ থাকার পরও মশা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। এমনকি পরে জানা গেছে, সেই ওষুধ ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি আর হবে না-সেটাই সবার চাওয়া।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, শুধু ওষুধ মজুদ করলেই হবে না; তা ছিটানোর ব্যবস্থাও করতে হবে। তবেই না মশার বিরুদ্ধে এগিয়ে থাকা যাবে। পাশাপাশি মানুষকেও তাদের বাসা-বাড়ি, ফুলের টব, ছাদের বাগান, পানির ট্যাঙ্ক, এসি-ফ্রিজে জমা পানি পরিস্কার করতে হবে। শুধু সরকার বা সিটি করপোরেশনের দিকে চেয়ে থাকলে চলবে না; নিজেরও এগিয়ে আসতে হবে। আমরা মনে করি মশার বিরুদ্ধে মাঠে নেমে যাওয়ার এখনই সময়। না হলে অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে। কেননা কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া মশার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হওয়া সম্ভব না।