মেদ ঝরানো নিয়ে যত ভুল ধারণা

3
Spread the love

মিলি রহমান

সৌন্দর্য সচেতন মানুষ মাত্রই চান একটি ঝরঝরে নির্মেদ শরীর। আবার অনেকেই নিজের শরীরের মেদ বাড়তে থাকা বা মোটা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি খুব একটা আমলে নেন না। একপর্যায়ে যখন সেটি বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করে, তখন টনক নড়ে এবং হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন মেদ কমানোর নানা উপায়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেই মেদ কমাতে গিয়ে নানারকম অপচিকিতসার দ্বারস্থ হন অনেকে। সাধারণত শরীরের বিপাক হার বাড়লে মেদ কমে। এই সূত্রটিকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত মেদ কমাতে অনেকেই বিপাক হার অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এই বিপাক হার বাড়ানো নিয়ে মানুষের মধ্যে রয়েছে নানা ভুল ধারণা।

অনেকেই মনে করেন মেদ কমাতে বেশি বেশি গ্রিন টি খাওয়া উচিত। কিন্তু আসল কথা হলো গ্রিন টির কারণে বিপাক হার বাড়লেও বেশি বেশি গ্রিন টি পান করলে যে বিপাক হার বেড়ে মেদ কমাবে এমনটা নয়। তাই দিনে দুইবারের বেশি গ্রিন টি খাওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।

আরেকটি ভুল ধারণা হচ্ছে, অনেকে মনে করেন কার্ডিও এক্সারসাইজের সঙ্গে বিপাক হারের অনেক বেশি সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই দুটি বিষয়ের মধ্যে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। কার্ডিও এক্সারসাইজ- যেমন, দৌড়ানো, সাঁতার, জগিং, সাইকিং এ সব নিয়মিত অভ্যাসে ওজন কমে। কিন্তু এর সঙ্গে বিপাক হার বাড়া-কমার কোনো সম্পর্ক নেই। ক্যালোরি পোড়াতে এর যেটুকু ভূমিকা রয়েছে, তার প্রভাবেই ঝরে মেদ। বিপাক হার বাড়াতে পারে ভেবে বাড়াবাড়ি রকমের কার্ডিও এক্সারসাইজ করলে শরীর কান্ত হবে ও অন্যান্য জটিলতাও দেখা দেবে। এজন্যই অনেক সময় দেখা যায়, নিয়ম মেনে ডায়েট, ব্যায়ামের পরেও অনেক ক্ষেত্রে সেভাবে ওজন কমে না।

আরেকটি ভুল ধারণা হলো, কম খেলেই বিপাক হার বাড়বে। ওজন কমানোর প্রশ্ন হোক বা বিপাক হার বাড়ানো, কম খাওয়া কোনোভাবেই বিজ্ঞানসম্মত নয়। বরং কম খেয়ে ওজন কমানোর মতো অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আর কিছুই হয় না। তিন ঘণ্টা অন্তর একটু একটু করে খেতে হবে। এমনভাবে খেতে হবে যাতে পেটে হালকা জায়গা থাকলেও মোটামুটি পেট ভরে যায়। কম খেলে শারীরিক কান্তি, গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা যেমন আসবে তেমনই খালি পেট মেদের পরিমাণও বাড়িয়ে দেবে।

নারী-পুরুষের এক বিপাক হার, এই ধারণাও অত্যন্ত ভুল। সমওজনের নারী ও পুরুষের বিপাক হার মোটেও এক হবে না। আসলে বিপাক হার নির্ভর করে পেশীর গঠন, শারীরিক কাঠামো ইত্যাদির ওপর। ঘুম, ক্যালোরি গ্রহণ ইত্যাদির ওপরও শরীরের বিপাক হার অনেকটাই নির্ভরশীল। তাই নারী ও পুরুষ উভয়ের বিপাক হার এক ভাবলে, সে ধারণা ভুল।

পুষ্টিবিদদের মতে, কোন কোন উপায়ে মেটাবলিজম বাড়বে সেটা যেমন জানা জরুরি, তেমনই কোন কোন জিনিসের আধিক্য ক্ষতি করবে সেটাও বোঝা দরকার। এমন অনেক কিছুই ডায়েটে দেওয়া হয় যা মেটাবলিজম সত্যিই কমায়, কিন্তু তার মানে এই নয় যে সেসব খাবার ছাড়া অন্য কিছু খাওয়া যাবে না।