রূপসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে দপ্তরগুলোতে ফিরেছে গতিশীলতা

3
Spread the love

  • মোস্তাফিজুর রহমান, রূপসা প্রতিনিধি

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে খুলনার রূপসায়  যোগদানের প্রায় ৫ মাসে বিভিন্ন কর্মকান্ড ও আর্তমানবতার সেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ইতিমধ্যে তিনি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। সৎ-সাহস ও সদিচ্ছা থাকলে একদিন কঠিন কাজেও সফলতা অর্জন করা সম্ভব। সাম্প্রতিক সময়ে তার কর্মকান্ডে এমন প্রমাণ মিলেছে।

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আকতার ২০১৯ সালের ২৬আগষ্ট খুলনার রূপসা উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে রূপসা উপজেলা প্রশাসনকে নিজের মতো করে ঢেলে সাজান। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করে একটি আধুনিক জনপদ গড়ে তোলার। তার সততা ও কর্মদক্ষতায় ক্রমান্বয়ে বদলে গেছে উপজেলা প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরের কর্মকান্ডে ফিরে এসেছে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা। কমেছে জনভোগান্তি আর বৃদ্ধি পেয়েছে জনসেবার মান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আকতার এ উপজেলাকে একটি উন্নত আধুনিক জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। শান্তির লক্ষ্যে তিনি পারিবারিক কলহ-বিবাদ, জমি-জমা, রাস্তা ঘাট সংক্রান্ত অসংখ্য বিরোধ নিষ্পত্তি করে জনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। তার কার্যালয় সবার জন্য উন্মুক্ত দ্বার হিসেবে খুলে রেখেছেন। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আদালত পর্যন্ত আর যেতে হচ্ছে না কাউকে। তিনি প্রায় শতাধিক মামলায় জড়িত আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন এবং ভেজালবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড ও পাবলিক প্যালেসে প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে প্রতিমাসে তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।

গাঁজা/মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে হুলিয়া জারি করেছেন। তিনি যুবসমাজকে বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। যা অতীতে কেউ পারেনি। শতাধিক বাল্য বিবাহ বন্ধ করেছেন। এক কথায় সর্বক্ষেত্রেই রয়েছে এই নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদচারণা। ইউএনও নাসরিন আকতার দাপ্তরিক কাজের বাইরে সকাল-বিকাল ছুটে বেড়ান রূপসার সকল প্রান্তে। কথা বলেন সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে। শোনেন তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা। নিয়মিত খোঁজখবর নেন সমাজের অবহেলিত গরিব-দুঃখী মানুষের। প্রধানমন্ত্রীর পতিশ্রুতি অনুযায়ী উপজেলার উন্নয়ন করার জন্য সকল কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রূপসা উপজেলা মাঠ প্রশাসন কর্মে যার বিশেষ অবদান সে নারী ইউএনও নাসরিন আকতার। তার অবদান উপজেলায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি কেবল একজন ইউএনও নন, তিনি একজন স্ত্রী, একজন মা, একজন গৃহিণী। এ সব কিছু একজন নারীর গতানুগতিক উপাধি। কিন্তু সব কিছু ছাড়িয়ে উপজেলার ৫ ইউনিয়নের সাড়ে ২ লাখ জনগোষ্ঠীর অভিভাবক হয়ে ওঠা অনেক নারীর পক্ষেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু তিনি পেরেছেন। সবার মধ্যে হয়ে ওঠা আজ এক অসাধারণ গল্পের মানুষ তিনি। রুপসা উপজেলায় জনবান্ধব প্রশাসন গড়ায় মহীয়সী এ নারী আজ রাজনৈতিকসহ সর্ব মহলে প্রশংসিত।

এ বিষয়ে রূপসা কলেজের অধ্যক্ষ ফ ম আ. সালাম বলেন, বর্তমান ইউএনও গরিব ও অসহায় মানুষের দুঃখের কথা শোনেন এবং তাদের বিভিন্নভাবে আর্থিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। কেউ বিপদে-আপদে পড়ে তার কাছে গেলে তিনি তাৎক্ষণিক সমাধান করে দেন। উপজেলা প্রেসকাবের সাধারণ সম্পাদক আ. রাজ্জাক শেখ বলেন,তিনি প্রধানমন্ত্রীর সকল উন্নয়ন কাজ গুলো গুরুত্বে সাথে দেখেন। জনগনের দূর্ভোগ লাগবে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আকতার বলেন, আমাদের চাকরির নির্ধারিত কোনো দায়িত্ব ও কর্তব্য নেই, সুনির্দিষ্ট কোনো পরিধি নেই, জনগণকে সেবা দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে ছকে বাধা দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনগণের মঙ্গল হয়, ভালো হয় সেটাই করার চেষ্টা করছি। তবে এমপি স্যার, জেলা প্রশাসক স্যার এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষের ঐকান্তিক সহযোহিতায় প্রতিটি কাজ করা সহজ হয়েছে বলে আশা করি। প্রত্যাশা করি প্রধানমন্ত্রীর উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবার সহযোগিতায় প্রতিটি সেক্টরের সমন্বয়ে প্রান্তিক জনগণের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে রূপসাকে মডেল উপজেলা গড়ে তুলবো।

এ প্রসঙ্গে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, রূপসায় ইউএনও স্বচ্ছতার সহিত কাজ করছেন। তিনি একজন দায়িত্বশীল ইউএনও। সরকারি কর্মকর্তাদের যে কাজ এবং দায়িত্ব তিনি তা সঠিকভাবে পালন করছেন।