খবর বিজ্ঞপ্তি
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বৃহৎ জনসমর্থনপুষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রধান “মাদার অব ডেমোক্রেসি” দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বর্তমান মহাস্বৈরাচার সরকার অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রেখেছে আজ ২ বছর হলো। কেবলমাত্র প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বানোয়াট এবং ঘষামাঝা নথির ভিত্তিতে মামলায় সরকারের আজ্ঞাবহ আদালত ও বিচারক গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে অদ্যাবধি কারাগারে আটকে রেখেছে। জামিন পাওয়ার পরিপূর্ণ হকদার তুমুল জনপ্রিয় এই নেত্রীকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় বলেই তাঁর জামিন নিয়ে টালবাহানা করে চলেছে। দেশজুড়ে কোটি কোটি ভক্ত অনুসারী নেতাকর্মি জনতার মা হিসেবে সম্মানিত ৭৪ বছর বয়স্ক গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রী আজ ৭৩০ দিন ধরে বন্দীবস্থায় সরকারের নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার।
বক্তারা গভীর উদ্বেগ উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বন্দী রেখে তাঁকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রের আয়োজন করেছে ডেনাইট ভোটের এই অবৈধ সরকার। হাসপাতালের প্রিজন সেলে সাক্ষাতকারী স্বজনরা জানিয়েছেন নেত্রীর শারিরীক অবস্থা দিন দিন ক্রমানবতি ঘটছে। সারাক্ষণ তিনি অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, বাম হাত সম্পূর্ণ বেঁকে গেছে, ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত, বিছানা থেকে অন্যের সাহায্য ছাড়া নামতে পারছেন না। খেতে পারছেন না, খেলে বমি করে ফেলছেন। এই ভয়াবহ অসুস্থতার প্রেক্ষিতে বিএসএমএমইউ’র মেডিকেল বোর্ড পরিস্কারভাবে বলেছেন তাঁর “এডভান্সড ট্রিটমেন্ট” প্রয়োজন। এই ট্রিটমেল্ট দেশে সম্ভব না জেনেও সরকারকে সন্তুষ্ট করতে আদালত তাঁকে জামিন দিচ্ছে না। দেশে যে ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন নেই খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে আদালতের আচরণ তাই প্রমাণ করে।
দেশে বাকশাল প্রতিষ্ঠা সম্পন্ন করতে এবং গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠাতে একইসাথে নির্বিচার লুটপাটতন্ত্র কায়েম করতেই সরকারের এই অমানবিক হীন আচরণ বলে বিক্ষোভ কর্মসূচীতে বক্তারা উল্লেখ করেন। দেশের অর্থনীতিকে খোবলা করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। অর্থমন্ত্রী সরাসরি স্বীকার করে বলেছেন, ব্যাংকসমূহের কাছে সরকারে দেনা প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে আজ আলোচিত নাম। দেশে লক্ষ লক্ষ তরুন আজ বেকার অথচ বৈধ এবং অবৈধ পন্থায় হাজার হাজার ভিনদেশী বাংলাদেশে চাকুরী করছেন।সরকারের দু:শাসনের বিরুদ্ধে একমাত্র প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং তার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সেকারণেই সরকার অত্যন্ত হীন উদ্দেশ্যে তাঁকে গুরুতর অসুস্থাবস্থায় কারাগারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বক্তারা সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, দেশনেত্রীর যে কোন ক্ষতির সব দায়-দায়িত্ব সরকারকেই গ্রহণ করতে হবে এবং এজন্য একদিন তাদেরকে জনতার আদালতে দাঁড় করানো হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্রের মুক্তি আজ সমার্থক। এই মুক্তির আন্দোলন অচিরেই তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। সেই মুক্তির মিছিলে সামিল হতে দেশবাসীকে উদাত্ত আহবান জানান সমাবেশে নেতৃবৃন্দ।
শনিবার বেলা ১১ টায় খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির আয়োজনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিহিংসার বিচারে কারাবন্দীত্বের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা আঃ গফফার। বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান মুরাদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন এড. শফিকুল আলম মনা, মনিরুজ্জামান মনি, শাহারজ্জামান মোর্তুজা, আমীর এজাজ খান, মীর কায়সেদ আলী, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, এড. ফজলে হালিম লিটন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আঃ রশিদ, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, খন্দকার ফারক হোসেন, রেহানা ঈসা, মাহবুব হাসান পিয়ারু, একরামুল হক হেলাল, মুজিবর রহমান, শরিফুল ইসলাম বাবু, কবির হোসেন, হেমায়েত হোসেন, জুলকার নাইম প্রমুখ।