করোনা ভাইরাসে মৃতের তালিকায় এতোদিন শুধু চীনের নাগরিকরা থাকলেও আজ একজন মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। একজন জাপানী নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, তিনিও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২৪ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশে নেয়া হয়েছে সতর্কাবস্থা। বিমানবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বিশেষ ব্যবস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলাতে থাকা বিভিন্ন হাসপাতালে প্রস্তুতি রয়েছে করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে। শনিবার করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি নীলফামারীর ডোমার উপজেলায়।
গত ২৯ জানুয়ারি সে দেশে ফেরার পরে জ্বর অনুভব করায় তাকে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জনের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। শনিবার তার শ্বাসকষ্ট হলে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। করোনা ওয়ার্ডের জন্য গঠিত মেডিক্যাল টিম ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসা দিচ্ছে। চীন ফেরত ওই শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত করতে রক্ত পরীক্ষার স্যাম্পলসহ রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটকে (আইইডিসিআর) জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চীনের উহান থেকে ফিরে আসা একদল নাগরিককে প্রথমে হজ ক্যাম্প ও পরে কয়েকজনকে সিএমএইচে রাখা হয়েছিল সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে। বাংলাদেশে থাকা কোনো চীনা নাগরিক ও চীন থেকে ফেরা কোনো বাংলাদেশী কেউ এখনও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। তারপরেও জনমনে নানা শঙ্কা ও ভয় কাজ করছে, আগাম নিরাপত্তা হিসেবে বাজারে থাকা মাস্কের চাহিদা বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থা সচেতনতা তৈরি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে নানা কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি খুবই ইতিবাচক। যেহেতু এখনও এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি, সেজন্য সচেতন হয়ে আগাম প্রতিরোধই একমাত্র ভরসা। রাজধানীর বাইরে রংপুরেও করোনা প্রতিরোধে যে ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, দেশের সবজেলাতে সেধরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। করোনা ভাইরাস দেশে দেখা দেয়নি বলে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ একেবারে নেই, যতোক্ষণ না পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক বাজারে আসছে বা প্রকৃতির নিয়মে এই ভাইরাসের প্রকোপ কমে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সচেতন হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে আমাদের আশাবাদ।