আজীবন রেশন পাবেন পুলিশ সদস্যরা

4
Spread the love


ঢাকা অফিস


অবসরের পর পুলিশ সদস্যদের পরিবারের দুই সদস্যকে আজীবন রেশন সুবিধা দেয়ার দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আজীবন রেশন দেয়ার বিষয়ে ভাবছে সরকার। এ বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার লক্ষ‌্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা চিঠি পাঠানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পুলিশ সদস্যদের আজীবন রেশন সুবিধা দেয়ার বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব আশরাফ উদ্দীন খান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘যে সকল পুলিশ সদস্য অবসরে যাবেন, তাদের পরিবারের মোট দুই সদস্যের আজীবন রেশন সুবিধা প্রদানের বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার নিমিত্তে তথ্য প্রেরণের জন্য বলা হলো। ’

যেসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো- ‘বর্তমানে পুলিশ সদস্যদের রেশনে কোন কোন আইটেম কী পরিমাণে দেয়া হয় (তথ্য ছকসহ)? আইটেমওয়ারি রেশনমূল্য ও ভর্তুকির পরিমাণ কত? যারা অবসরে যাবেন, তাদের পরিবারের দুই সদস্যকে আজীবন কী হারে রেশন দেয়া হবে? আজীবন রেশন প্রদান করা হলে, এ খাতে বার্ষিক মোট কত টাকা ভর্তুকি দিতে হবে? এবং ভর্তুকি কোন খাত থেকে কীভাবে মিটানো হবে?

সূত্র জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ চিঠির জবাব দেয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

পুলিশ সদর দপ্তর সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। চলতি বছরে পুলিশ সপ্তাহে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর পুলিশ সদস্যদের পরিবারের দুই সদস্যকে আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়ে সরকার নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ৪ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহের কল্যাণ সভায় এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আশা করি, পুলিশ সদস্যদের পরিবারের দুজন সদস্যকে আজীবন রেশন সুবিধা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।

এদিকে, আজীবন রেশন সুবিধা পাওয়ার খবরে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, পুলিশ সদস্যরা আত্মোৎসর্গ করে দায়িত্ব পালন করেন। নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে কর্মঘণ্টা ও ছুটির বিষয়েও ভাবেন না। এর বিপরীতে তারা যেসব সুযোগ-সুবিধা পান, তা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুলিশের তুলনায় নগণ‌্য। তবে আজীবন রেশন সুবিধা সরকার বিবেচনা করায় অনেক অপ্রাপ্তির মধ্যেও প্রাপ্তি যোগ হবে।

পরিদর্শক শেখ বাশার বলেন, আমাদের কোনো কর্মঘণ্টা নেই। সবাই যখন ছুটি কাটায়, তখন আমরা তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত থাকি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা সুযোগ-সুবিধা অনেক কম পাই। তবে আজীবন রেশন সুবিধা অনেক না পাওয়ার মধ্যে একটা বড় প্রাপ্তি।

শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান বলেন, এটা দরকার ছিল। অন্যান্য সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীতে এ সুবিধা আছে। পুলিশ সদস্যদের আজীবন রেশনের আওতায় আনা হচ্ছে, শুনে ভাল লাগছে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের পুলিশ সপ্তাহে একজন সদস্যের পরিবারের দুই সদস্যের আজীবন রেশন সুবিধা দেয়ার দাবি তোলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সময়ই তাদের দাবি মেনে নেন। এর পর থেকে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি ছিল না। এ বছর পুলিশ সপ্তাহে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।