আবাসিক কোয়াটারে ঝুকি নিয়ে বসবাস করছেন দাকোপের কর্মকর্তা কর্মচারীরা

18
Spread the love

মোঃ জাহিদুর রহমান সোহাগ দাকোপ (খুলনা)

দীর্ঘদিন যাবৎ জীবনের ঝুকি নিয়ে খুলনার দাকোপে মারাত্মক জরাজীর্ণ আবাসিক স্টাফ কোয়াটারগুলোতে বসবাস করছে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ছাদের আস্তরণ খসে প্রান হারানোর ভয়ে সারাক্ষন আতংকে থাকেন তাদের পরিবার পরিজন। হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য পৃথক ১২টি আবাসিক কোয়াটার রয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালের বেশ কয়েক বছরের আগের পরিত্যাক্ত ১টি বাদে ৫টি কোয়াটারের ২২টি ইউনিট ও উপজেলা পরিষদের ব্যাচেলরসহ ৬টি কোয়াটারের ৪০টি ইউনিট। দীর্ঘদিনের পুরাতন এসব জরাজীর্ণ আবাসিক কোয়াটারে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝঁকি নিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। কোয়াটারগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে বড়-বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে এবং যেখান সেখান থেকে খসে পড়ছে ছাদের আস্তরণ বা পলেস্থার। বৃষ্টি হলে ছাদের বড়-বড় ফাঁটল দিয়ে পানি চুইয়ে প্রয়োজনীয় মালামাল নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া কোয়াটারগুলোর জানালা দরজার অবস্থা অত্যান্ত শোচনীয় হওয়ায় সারাক্ষন চুরি হওয়ার আতংকে দিন কাটছে তাদের।

হাসপাতালের একাউন্টেট বর্ণালী প্রসাদ রায় জানান হাসপাতালের কোয়াটারগুলো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন কিছুদিন পূর্বে গভীর রাতে ঘুমান্ত অবস্থায় হঠাৎ সিলিন ফ্যানসহ ছাদের আস্তরণ খসে খাটের উপর পড়লে খাটের এক পাশ ভেঙ্গে যায়। কিন্তু শব্দ শুনে পড়ার আগেই গোড় দিয়ে তিনি খাটের অপর পাশে চলে যায়। তিনি অল্পের জন্যে প্রানে বেঁচে আছেন বলে জানান।

উপজেলা পরিষদ কোয়াটারে বসবাসরত উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান গৌরপদ বাছাড় বলেন কোয়াটারগুলো অত্যান্ত জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কারনে অনেক আগেই থেকেই অযোগ্য কোয়াটারগুলো আমি পরিত্যক্ত ঘোষনা করার দাবি জানিয়ে আসছি। তাছাড়া সংস্কারের কথাও বলে ছিলাম। আমি নিজেও কয়েক হাজার টাকা খরচ করে সংস্কার করেছি। এছাড়া মাসিক সভায়ও আমি আলোচনা করেছি এবং রেজুলেশন হয়েছে। কিন্তু সরকারী নিয়ম থাকার স্বতেও কেন যে সংস্কার করছে না তা আমার বোধগম্য নয়।

উপজেলা প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস জানান অনেক আগেই অধিকাংশ কোয়াটার পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। বর্তমানে কোয়াটারগুলো নতুন নির্মান করা ছাড়া সংস্কারযোগ্য নহে।

উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাম্মেল হক নিজামী বলেন হাসপাতালের কোয়াটারগুলো এতই জরাজীর্ণ যে বসবাসের অনুপযোগী। তাছাড়া সংস্কার করেও প্রতি বছর টাকা খরচ ছাড়া কোন কাজ হচ্ছে না। কোয়াটারগুলো পরিত্যাক্ত ঘোষনা করার জন্যে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন মহলে তিনি আবেদন করেছেন বলে জানান।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল ওয়াদুদ জানান কোয়াটারগুলো সংস্কার করার মতো নাই। সবগুলো পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে নতুন ভবনের জন্যে মন্ত্রালয় চিঠি লিখব।

এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান বলেন কোয়াটারগুলোর অবস্থা এতোই খারাপ যে বসবাসের পরিবেশ নেই বললে চলে। ইতি মধ্যে মাসিক সভায় রেজুলেশন করা হয়েছে। যেগুলো সংস্কার করা যায় সেগুলো সংস্কার করা হবে। বাকিগুলো নতুন ভবন চেয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মন্ত্রালয় চিঠি পাঠানো হবে।