কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতনিধি
চাকু ও মোবাইল উদ্ধারে গিয়ে আসামি পক্ষের হামলায় ৫ পিবিআই কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। বুধবার রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল হোসেন, এসআই হুমায়ূন, এএসআই হাফিজুর রহমান, এএসআই মো. জাফর, এএসআই আব্দুল খালেক।
ঘটনার সময় এএসআই হাফিজুর রহমানকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারধর করা হয় বলে পিবিআই- এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পিবিআই সদস্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
পিবিআই-এর উপর হামলার ঘটনায় থানা মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও তার ভাই মুশতাক আহমেদ লাভলুকে আটক করেছে পুলিশ।
ঝিনাইদহ পিবিআই-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গত ৩০ নভেম্বর কালীগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মাদ্রাসাছাত্র আল-আমিন নিখোঁজ হয়। ডিসেম্বরের ৪ তারিখে ওই ছাত্রের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ঝিনাইদহ পিবিআই-এর উপর।
হত্যা মামলায় কিছুদিন আগে কালীগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের মুশফিকুর রহমান ডাবলুর ছেলে তারিক হাসান সাব্বির ও আব্দুস সামাদ মিল্টনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত হৃদয়কে গ্রেফতার করে পিবিআই। তাদের দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। রিমান্ডে থাকা সাব্বির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাকু ও যে মোবাইল দিয়ে ম্যাসেজ দেয়া হয়েছিল সে মোবাইল তাদের বাড়িতে রয়েছে বলে জানায়।
এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই-এর এসআই সোহেল হোসেন বুধবার রাত ১০টার দিকে ফোর্স নিয়ে আড়পাড়া গ্রামের মুশফিকুর রহমান ডাবলুর বাড়িতে আলামত উদ্ধারে যান। আলামত উদ্ধার করে গাড়িতে উঠার সময় আসামি সাব্বিরের বাবা মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও তার চাচা মুশতাক আহমেদ লাভলুর নেতৃত্বে ১২/১৩ জন পিবিআই সদস্যদের উপর হামলা করে। সে সময় তারা এএসআই সোহেল হোসেনকে আটকে রেখে মারধর করে এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত আলামত ও মামলার ডকেট ছিনিয়ে নেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, পুলিশের উপর আক্রমণ করে আসামি ছিনতাই চেষ্টা এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার আলামত ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আসামি সাব্বিরের চাচা কালীগঞ্জ পৌর সভার সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু মুঠোফোনে সাংবাদিকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, পিবিআই সারাদিন পুকুর সেচে কোন অস্ত্র পায়নি। রাতে রান্না ঘরে এসে ছোট একটি চাকু হাতে দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় একজনকে ধরে রাখি।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, হত্যা মামলার আলামত উদ্ধার করতে এসে আসামি সাব্বিরের পিতা ডাবলু ও চাচা লাভলুর নেতৃত্বে পিবিআই এর উপর হামলা হয়েছে।