সাফল্য, উন্নয়ন ও সম্ভাবনায় সরকারের বছরপূর্তি আজ

104
Spread the love

বিশেষ প্রতিনিধি

আজ ৭ জানুয়ারি বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের এই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় সরকারকে নতুন করে কোনো পরিকল্পনা আঁটতে হয়নি। ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনায়ই সরকারকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। এর মধ্যে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু অর্ধেক দৃশ্যমান হয়েছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে যুগান্তকারী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দেশের ইতিহাসে জাতীয় প্রবৃদ্ধি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে দারিদ্র্যের হার ২০ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার। গত দুই মেয়াদে সরকার যে উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছিল, তা থেকে বিচ্যুতি হয়নি। উন্নয়ন প্রক্রিয়া ও ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। বলা যায়, সাফল্য, উন্নয়ন ও সম্ভাবনায় শেখ হাসিনার সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদের বছরপূর্তি করছে। 

সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন-রেডিও এবং অনলাইনে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সম্প্রচার করা হবে।

২০১৯ সালটি কেমন গেল- এর পর্যালোচনায় বলা যায়, কিছু ঘটনা ছাড়া রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উন্নয়নের নবযাত্রার এক বছর পূর্ণ হল। বিদায়ী বছরটা শুরুই হয় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মহাবিজয় দিয়েই। সারাদেশেই আওয়ামী লীগসহ মহাজোটের জয়-জয়কার। পোড় খাওয়া ভোটার ছাড়াও তরুণ প্রজন্মের নতুন ভোটাররাও উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকার আওয়ামী লীগকেই টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের জন্য নৌকার পক্ষে ব্যালট বিপ্লব ঘটান। টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে মেয়াদের এক বছর পূর্তি ঘটা করে পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

নদীর জায়গা দখল উচ্ছেদ করায় প্রাণ ফিরেছে রাজধানীর চারপাশের নদীগুলোয়। পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস কমেছে। অবশ্য সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাও সরকারকে অনেকটা বেকায়দায় ফেলেছে বছরব্যাপী। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিত্যপণ্য ও পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে নাকাল বাণিজ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে এক বছরে সরকারের সাফল্যের পাল্লা ভারী হলেও কিছু ব্যর্থতাকে আড়াল করা যাবে না।  

যেকোনো সরকারেরই সাফল্য ও ব্যর্থতা উভয়ই থাকে। তবে সাফল্যের পাল্লা ভারী হলে এবং অধিকাংশ নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পূরণ হলেই সেই সরকারকে বলা যায় সফল ও সার্থক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ মনে  করেন, ব্যর্থতার চাইতে বর্তমান সরকারের সাফল্যের পাল্লাই বেশি। বড় কথা হল, এই সরকার বাংলাদেশকে যে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে এনেছে, তা হতে বিচ্যুত হয়নি। উন্নয়ন প্রক্রিয়া এবং ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। বর্তমান প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২১ শতাংশ। মাথাপিছু আয় ১,৬১০ মার্কিন ডলার। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ২ হাজার মার্কিন ডলারে। এই সময়ের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার যে স্বপ্ন তা-ও পূরণে সরকার আশাবাদী। 

দেশকে নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে সামনে এগিয়ে নিতে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে ধারাবাহিকভাবে বিশাল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে এক বছরে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন শেখ হাসিনা। নানা দুর্বলতায় দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নিষ্ক্রিয় ও কোণঠাসা হয়ে পড়ায় রাজনীতিতে বড় ধরনের অস্থিরতা ছিল না। তবে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের আলোচিত দুর্নীতি সরকারকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেললেও ক্যাসিনোকাণ্ডের পর শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে সরকার। এ ছাড়া রাজাকারের তালিকা প্রকাশের পর এ তালিকায় বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার নাম আসায় তা নিয়েও অনেকটা বিব্রত হতে হয়েছে সরকারকে।

পুরনোদের বাদ দিয়ে তরুণদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করে যে চমক দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, এর সুফলও দেখতে পেয়েছে দেশের মানুষ। প্রথমবার মন্ত্রী হয়েও এক বছরে যে সফলতা দেখিয়েছেন মন্ত্রিসভার তরুণ সদস্যরা, তাতে প্রমাণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ছিল। সরকারের এই এক বছরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছোট-খাটো ত্রুটি ও ব্যর্থতা থাকলেও সফলতার পাল্লাই ভারী বলে মনে করছেন মন্ত্রীরা।

মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে এখনও কোনো বিতর্ক তৈরি হয়নি। দীর্ঘদিনের মন্ত্রীদের বাদ দিয়ে নতুনদের সুযোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী প্রশংসিত হয়েছেন। তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে সরকার জনস্বার্থে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমান সরকারের এই স্বল্প সময়ে সবচেয়ে বড় সাফল্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান এবং বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার চারপাশের নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে কঠোরতার সঙ্গে পরিচালিত অভিযানে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে নদীতীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বহুতল ভবনসহ সব ধরনের স্থাপনা। একইসঙ্গে নদীর নাব্য ফেরাতেও চলছে খনন কাজ। এই উচ্ছেদ অভিযান সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। 

একইভাবে সাড়া ফেলেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া শুদ্ধি অভিযান। ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান সরকারের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। দুর্নীতিবিরোধী এ শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর সারা দেশে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থন পেলেও শেষ মুহূর্তে এসে অভিযান ঝিমিয়ে পড়ায় সমালোচিত ও বিতর্কিত হচ্ছে সরকার।

নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়ে ভূমি সেক্টরে জনদুর্ভোগ কমাতে নানা উদ্যোগ নেয়। জরুরি সেবা প্রদানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে হট লাইন স্থাপন, অনলাইনে খতিয়ান সেবা চালু, ই-নামজারি কার্যক্রম চালু করাসহ অন্যান্য ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে সফল হয় ভূমি মন্ত্রণালয়।

সামগ্রিক বিবেচনায় সরকারের প্রথম বছরটি ভালোই কেটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশ আরও এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা মানুষের। এই প্রত্যাশা পূরণে সরকারের সামনে আরও চারটি বছর রয়েছে।

গত এক বছরে রেমিট্যান্স বাড়ার গতি ছিল সন্তোষজনক। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাড়ছেই। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৯৪০ কোটি ১২ লাখ (৯.৪ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন তারা। আর ২০১৯ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে ১৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। এক মাসের হিসাবে বাংলাদেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে গত ডিসেম্বরে।

বহির্বিশ্বে এক বছরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও বেড়েছে। নির্বাচন, গণতন্ত্র ও সুশাসন নিয়ে মতভেদ থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। ভারত ও চীনের সঙ্গেও সখ্য বেড়েছে। 

এক বছরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্য ছিল লক্ষণীয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কার্যকরি সাফল্য এখনও ধরা না দিলেও এ ইস্যুতে বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে সমর্থন পাচ্ছে। বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্ট্যাটাস পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে সরকার। বাংলাদেশ এখন আর নিম্ন আয়ের দেশ নয়। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কূটনীতির বার্তা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে বাংলাদেশ অনেকটাই সক্ষম হয়েছে। বছরের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে প্রিয়া সাহার সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ কূটনৈতিক অঙ্গনে নাড়া দেয়। যদিও বাংলাদেশ সেই ধাক্কা সামলেছে ভালোভাবে। 

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার কারণে সৃষ্ট সংকট সমাধানের বিষয়ে এখনও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের অসহযোগিতার কারণে দুই দফা উদ্যোগ নিয়েও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে। এরইমধ্যে এই মামলার শুনানি হয়েছে। বিষয়টিকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হলেও প্রত্যাবাসন এবং ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর ইস্যুতে সরকার এখনও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।

এক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দূতাবাস বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যমান দূতাবাসগুলোকে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ ছিল সরকারের। বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। একইভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে আগামী ৫ বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও ১০০টি বৈদেশিক মিশন স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

বেশ কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের কমন ফান্ড ফর কমোডিটিজের (সিএফসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। ১০১টি দেশ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়নসহ ৯টি সংস্থা এই সংগঠনের সদস্য।

ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ৫৩ দিনের মধ্যে নকশা অনুমোদনসহ ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছে। বিক্রয়ের অনুমতি ও নামজারি করার জন্য অপ্রয়োজনীয় বিধানকে বাদ দিয়ে সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এর ফলে রাজউক, গৃহায়ন অধিদফতরসহ অন্যান্য সংস্থায় সেবা পেতে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দফতরে যাওয়া ও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার ভোগান্তির অবসান ঘটছে।

সরকারের এক বছরের বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান সরকারের এক বছরে দায়িত্ব পালনে নতুন উদ্যম, উদ্দীপনা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে অনেক পদক্ষেপ নেয়ায় রাষ্ট্রযন্ত্র মানুষের জন্য সময়োপযোগী সেবামূলক ভূমিকা নিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি অবদান রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান মেয়াদের সরকার পূর্ববর্তী মেয়াদের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুততার সঙ্গে জনমুখী, কল্যাণকর ও অনিয়ম-দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তুলেছে। সেই অর্থে সরকারের সাফল্যই অনেক বেশি। 

বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি গুজব ঠেকাতেও সফলতা দেখিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে সরকারকে নানা সমালোচনা পোহাতে হয়েছে আগের বেশ কয়েক বছর। এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতেও সফল হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এক বছরে কৃষি প্রণোদনা, ডিএপি সারের দাম কমানো, অ্যাপভিত্তিক কৃষিসেবা চালু করেছে। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ৯টি ফসল উৎপাদনে সারা দেশের ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে ৮০ কোটি ৭৬ লাখ ৯১ হাজার ৮০০ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়। কৃষকের স্বার্থে ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সারের দাম প্রতি কেজিতে ৯ টাকা কমানো হয়েছে।

এক বছরে নির্বাচনি ইশতেহার কতটুকু বাস্তবায়ন করেছেন- এমন প্রশ্নর জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের ইশতেহার ৫ বছরের জন্য দেয়া হয়। আমি মনে করি যে, এক বছরে আমরা যেটুকু সফলতা অর্জন করার লক্ষ্য স্থির করেছিলাম, এর চেয়ে বেশি অর্জন করেছি।

এক বছরে সফলতার সঙ্গে কিছু ব্যর্থতাও রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সবই সাফল্য- এমন দাবি করব না। কিছু কিছু ভুল-ব্যর্থতাও রয়েছে। এই ভুল-ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য নবতর পথযাত্রা সূচনা করব। নতুন আশার মালা গেঁথে আমাদের সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করব। আমাদের মেগা প্রকল্পের কাজ আরও এগিয়ে যাবে। সড়ক-পরিবহন আইন বাস্তবায়নে ধাপে-ধাপে পদক্ষেপ নেব।