খুবির ছাত্র-ছাত্রীদের উত্থাপিত দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখতে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে ৯ সদস্যের কমিটি

30
Spread the love


প্রেস বিজ্ঞপ্তি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে শিক্ষার্থীদের দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের কার্যালয়ে জমা দেয়। পরদিন ১৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে তারা উক্ত স্মারকলিপির সাথে সংযুক্তি হিসাবে আরো কিছু কাগজ পত্রের কপি যুক্ত করে উপাচার্য বরাবর প্রেরণের অনুরোধ করে। ছাত্রবিষয়ক পরিচালক স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবর ঐ দিন প্রেরণ করেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্বেগসমূহ ও সংযুক্তি পর্যালোচনাপূর্বক শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার জন্য ২১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত ঐ দিন, শিক্ষার্থীদের চাহিদা মোতাবেক ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের কার্যালয় ভবনের সম্মুখে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার উপস্থিতিতে তিন ঘন্টার অধিক সময় ধরে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় তাদের দাবি ও উদ্বেগসমূহকে স্বল্পমেয়াদে ও দীর্ঘমেয়াদে সমাধানযোগ্য এই দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। স্বল্পমেয়াদে সমাধানযোগ্য বিষয়ে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়া হয়।


বেতন-ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষার্থীরা যেহেতু বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করেছে সেক্ষেত্রে ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অফিসিয়াল মাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহ ও চার বছরে একজন শিক্ষার্থী দ্বারা প্রদেয় ফিএর তুলনামূলক চিত্র প্রস্তুত করে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে কর্ত্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়। তথ্যপ্রাপ্তি, টার্মফাইনাল পরীক্ষা ও ফলাফলপ্রকাশ, ভর্তিপরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ, সমাবর্তনপ্রস্তুতি ও জাতীয় দিবস উদযাপন সংক্রান্ত ব্যস্ততার কারণে ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ইতোমধ্যে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের (০৮টি) বেতন-ফি এর তুলনামূলক চিত্র পূর্ব প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের কার্যালয়ের ফেসবুক পাতায় প্রদর্শন করা হয়।
এমতাবস্থায় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি শীতকালীন ছুটির পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলে। ঐ দিনই পূর্বের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হাদী চত্ত্বরে জড়ো হয় এবং তাদের উদ্বেগ/দাবিনিয়ে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান নেয়। ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও সহকারি ছাত্রবিষয়ক পরিচালকগণ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং উপাচার্য ব্যাতীত কারো সাথে কথা বলবেনা বলে জানায়। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ পাশের গেটে অবস্থান নেয় এবং ফেস্টুন প্লাকার্ড সহকারে শ্লোগান দিতে থাকে। উপাচার্য মহোদয় সকল স্কুলের সম্মানিত ডিনবৃন্দ ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেএবং সংশ্লিষ্ট কমিটিকে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে দাবি গুলো পর্যালোচনা পূর্বক জরুরীভিত্তিতে সুপারিশ প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। ইতোমধ্যে সম্মানিত কিছু শিক্ষক ছাত্রদেরসাথে সংহতি প্রকাশকরে এবং অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য রাখেন। গঠিত কমিটির আহবায়ক সকল সদস্যকে নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার প্রস্তাব দিলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ব্যাতীত অন্য কারো সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায় এবং সম্মানিত ডিনবৃন্দদের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শনসহ অসৌজন্য আচরণ করে। উপাচার্য মহোদয় বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রতিনিধির সাথে নিয়ে কমিটির সাথে আলোচনা করতে চাইলে, সে প্রস্তাব ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখান করে। পরবর্তী দিন ০২/০১/২০২০,সকাল থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে উপাচার্য মহোদয়সহ অন্যান্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এ দিন দুপুর বারোটায় শিক্ষার্থী ছাড়াই উক্ত কমিটি কাজ শুরু করে।গঠিত কমিটি শিক্ষার্থীদের দাবীগুলো অনুযায়ী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি দীর্ঘ ৪ঘন্টা ধরে পর্যালোচনা করেন এবং আরো কিছু তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করেন। কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করার জন্য বিকাল সাড়ে চারটায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে সকলকে অবহিত করেনএবং সাংবাদিক সম্মেলনের এ বিবৃতি শিক্ষার্থীদের নিকট সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে নিম্নোক্ত বিষয় জানানো হয়ঃ
১। আবাসন সংকট সমাধান একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। চলমান দুটি হলের বর্ধিতাংশের নির্মাণ কাজ শেষ হলে আগামী এপ্রিল, ২০২০ এ ২৫০জন ছাত্রীর ও ২০০জন ছাত্রের আবাসন নিশ্চিত সম্ভব হবে। ১০ তলা বিশিষ্ট ২টি হল (১ টি ছাত্র ও ১টি ছাত্রী) নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করা হচ্ছে।
২। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বর্তমান সময় থেকে ১ ঘন্টা বাড়িয়ে রাত্র ৮:৩০ মি: পর্যন্ত খোলা রাখার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৩। ২৪ ঘন্টা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের সুপারিশ করা হবে।
৪। সাধারণ জামানত গ্রহণ না করা/ ফেরত প্রদান করা ও অন্যান্য ফি সংক্রান্ত বিষয়ে আরো কিছু তথ্যাদি সংগ্রহ ও পর্যালোচনা পূর্বক সুপারিশ করা হবে।
৫। খাতা মূল্যায়নের চলমান পদ্ধতি পরিবর্তন করলে একাডেমিক ক্যালেন্ডার নির্বিঘœ রাখা সম্ভবনা ও হতে পারে বিধায়, আরো পর্যালোচনা প্রয়োজন বলে কমিটি মনে করে।
৫। ছাত্র সংবিধির ধারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সার্বজনীন সুষ্ঠু-সুশৃঙ্খল শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রণীত। এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে কমিটি খতিয়ে দেখতে পারে।